ক্র্যাক-প্লাটুনের বীর গেরিলাযোদ্ধা শহীদ আজাদ
ক্র্যাক-প্লাটুনের বীর গেরিলাযোদ্ধা আজাদ
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছেন এমন অনেক শহীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শহীদ আজাদ।
ঢাকার সবচেয়ে বড় লোক পরিবারের ছেলে মাগফার উদ্দিন চৌধুরী আজাদ। তাদের বাড়িতে হরিণ ছিল, সরোবরে সাঁতার কাটত ধবল রাজহাঁস,
মশলার বাগান থেকে ভেসে আসত দারুচিনির গন্ধ। (ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই গানটার শুটিং হয়েছিল তাদের বাড়িতে)। আজাদ ক্লাস সিক্সে পড়ে, সেন্ট গ্রেগরি। ১৯৬০ এর দশক।আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করবেন। আজাদের মা বললেন, তুমি বিয়ে করবে না, যদি করো, আমি একমাত্র ছেলে আজাদকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করলে আজাদের মা সাফিয়া তার বালকপুত্রের হাত ধরে ওই রাজপ্রাসাদ পরিত্যাগ করেন এবং একটা পর্ণকুটীরে আশ্রয় নেন।
ছেলেকে লেখাপড়া শেখান। আজাদ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করে।
মশলার বাগান থেকে ভেসে আসত দারুচিনির গন্ধ। (ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই গানটার শুটিং হয়েছিল তাদের বাড়িতে)। আজাদ ক্লাস সিক্সে পড়ে, সেন্ট গ্রেগরি। ১৯৬০ এর দশক।আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করবেন। আজাদের মা বললেন, তুমি বিয়ে করবে না, যদি করো, আমি একমাত্র ছেলে আজাদকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করলে আজাদের মা সাফিয়া তার বালকপুত্রের হাত ধরে ওই রাজপ্রাসাদ পরিত্যাগ করেন এবং একটা পর্ণকুটীরে আশ্রয় নেন।
ছেলেকে লেখাপড়া শেখান। আজাদ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করে।
দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে। আজাদের বন্ধু রুমী হাবিবুল আলম
বদি জুয়েল প্রমুখ গেরিলা অপারেশনে অংশ নিচ্ছে আগরতলা থেকে ফিরে এসে। আজাদ
তাদের সঙ্গে যোগ দিল। আজাদদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা শেল্টার নিল। অস্ত্র
লুকিয়ে রাখল। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট/ ৩১ আগস্ট আজাদদের বাড়ি পাকিস্তানি
সৈন্যরা ঘিরে ফেলে। গোলাগুলি হয়। আজাদসহ মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে যায়
পাকিস্তানি মিলিটারি। আজাদকে রমনা থানায় রাখা হয়। আজাদের মাকে জানানো হয়,
আজাদ রাজসাক্ষী হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। মা দেখা করেন ছেলের সঙ্গে। বলেন,
শক্ত হয়ে থেকো বাবা কোনো কিছু স্বীকার করবে না।
‘কতদিন ভাত খাই না মা, আমার জন্য ভাত নিয়ে এসো’ -৭১’এ হানাদার
বাহিনীর হাতে আটক ক্র্যাক-প্লাটুনের বীর গেরিলাযোদ্ধা আজাদ ভাত খেতে
চেয়েছিলেন মায়ের কাছে। কথা মতো মা ভাত নিয়েও এসেছিলেন। তবে ছেলেকে আর
পারেননি।
সেই থেকে অপেক্ষা করেছিলেন আজাদের মা, এই বুঝি ফিরে এসে ভাত
চাইবে তার ছেলে। না, আর ফেরেননি আজাদ। তাই মা-ও আর কোনো দিন ভাত মুখে
তোলেননি। ১৪ বছর একবেলা রুটি খেয়ে থেকেছেন মা। ঘুমিয়েছেন মেঝেতে। কারণ ছেলে
যে তার শুয়ে ছিলো নাখালপাড়ার ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এম.পি হোস্টেলের
মিলিটারি টর্চার সেলের মেঝেতে।
১৯৮৫ সালের ৩০ আগস্ট না ফেরার দেশে চলে যান শহীদ আজাদের মা। তাঁর কবরের নাম ফলকে নাম-পরিচয়ের জায়গায় লেখা হয় ‘শহীদ আজাদের মা’।
আনিসুল হক তার ‘মা’ উপন্যাসে তুলে ধরেছেন আজাদ ও তার মায়ের
আত্মত্যাগ । সত্য ঘটনা। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের “একাত্তরের দিনগুলি”
গ্রন্থ থেকেও শহীদ আজাদ ও তার মায়ের কথা জানা যায়। আশা করছি সবাই উনার
ব্যাপারে জানবেন !
No comments